ওগলালা এসে প্রবেশ করলো ডেকে। পাশেই এক চেয়ারে বসল। তার পোশাকে বেশ পরিবর্তন এসেছে। মিনিস্কার্ট ও টাইট প্যান্টের বদলে সে এখন পরেছে লম্বা স্কার্ট, গাউন ধরনের ঢিলা জামা হাতাওয়ালা। এখন এসেছে মাথায় রুমাল জড়িয়ে।
চেয়ারে বসে সে বলল, ‘দেখুন তো আমাকে কেমন লাগছে?’
আহমদ মুসা ওগলালার দিকে চেয়ে হাসল। বলল, ‘আমি বলব না,তুমিই বল তোমার কেমন মনে হচ্ছে?’
হাসল ওগলালা। বলল, ‘খুবই ফরমাল মনে হচ্ছে। এভাবে কি সর্বক্ষণ কেউ থাকতে পারে? না চলাফেরা সম্ভব এভাবে?’
‘তার মানে ভাল লাগছে না।’
‘ঠিক তা নয়। আমাকে নতুন মনে হচ্ছে। আর যেহেতু ভাল লাগাটা রিলেটিভ। এজন্যে কাউকে এটা ভালও লাগতে পারে, মন্দও লাগতে পারে।’
‘কিন্তু তোমার তো নিজস্ব ভাল লাগা মন্দ লাগা আছে।’
‘হঠাৎ নিজেকে যেন দায়িত্বশীল মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, অন্যদের সাথে ধুম-ধারাক্কা, হৈচৈ, লাফালাফি যেন আমার জন্যে নয়। হাসি পাচ্ছে এটা ভাবতে।’
এ সময় ডেকে প্রবেশ করলো জিভারো। বলল ওগলালার দিকে তাকিয়ে, ‘বাহ!তোকে তো সুন্দর মানিয়েছে।’
‘তুমি বিদ্রূপ করছ নাতো ভাইয়া?’ বলল ওগলালা।
‘না সত্যি বলছি, তোকে অনেক ‘এলিট’ মানে অনেক মর্যাদা সম্পন্ন মনে হচ্ছে।’
‘ঠিক বলেছ জিভারো, শালিন পোশাকে মেয়েদের মর্যাদা সম্পন্ন করে তোলে। মানুষ তাদেরকে খারাপ দৃষ্টিতে নয়, মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখে।’
‘কিন্তু মেয়েদেরকেই শুধু শালিন ও সংযত হতে হবে কেন ? আপনাদের ধর্মে মেয়েদের জন্যে অবাধ মেলামেশাকে আপত্তিকর বলা হয়েছে কেন ?’ বলল ওগলালা আহমদ মুসার দিকে ফিরে বসে।
আহমদ মুসা হাসল। বলল, ‘অবাধ মেলামেশা শুধু মেয়েদের জন্যে নয়, ছেলেদের জন্যেও আপত্তিকর বলা হয়েছে। তবে মেয়েদেরকে বেশী শালিন, সংযত ও চলাফেরায় সাবধান হতে বলা হয়েছে এজন্যে যে, একদিকে মেয়েরা আত্মরক্ষায় দুর্বল, আর অন্য দিকে ছেলেরা সবল ও মেয়েদের ব্যাপারে আক্রমণাত্মক। কোন অঘটন ঘটলে, তাতে ক্ষতিও হয় মেয়েদের বেশী।’
‘বুঝেছি ভাইয়া আপনি যা বলতে চাচ্ছেন। কিন্তু মেয়েদের শালিন, সংযত ও সাবধান হওয়াই কি পুরুষের এই যুলুম ও অবিচারের প্রতিকার? কেন...।’
আহমদ মুসা ওগলালা কে বাধা দিয়ে হেসে বলল, ‘বুঝেছি তোমার কথা। এটুকুকেই প্রতিকার বলা হয়নি। যে পুরুষের দ্বারা এ ধরনের অঘটন ঘটবে, তার বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা করা হয়েছে। ধর্ষণকারী যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে প্রকাশ্যে ও জনসমক্ষে ৮০টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়া হয়েছে। আর যদি সে বিবাহিত হয়, তাহলে প্রকাশ্যে ও জনসমক্ষে তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যার বিধান দেয়া হয়েছে। এ ধরনের শাস্তির ব্যাবস্থা করা হলে ধর্ষণ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে।’
‘সাংঘাতিক ! আমাদের সমাজে এটা অকল্পনীয়।’ জিভারো বলল।
‘সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা ও মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এর প্রয়োজন আছে।’ বলল আহমদ মুসা।
‘আমি ভাবছি ভাইয়া। আমি সমর্থন করছি আপনাকে, আপনাদের আইনকে। ধন্যবাদ নতুন এক শিক্ষার জন্যে।’
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন